সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪২ অপরাহ্ন
সরেজমিনে লক্ষ করা যায়, ঢালাইয়ে সিলিকা বালুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি । শ্রমিকরা নৌকা দিয়ে এ মাটি সংগ্রহ করছে পার্শ্ববর্তি হাওর থেকে। সি.সি ঢালাইয়ের মিক্সিংয়েও চলছে তুঘোলকি কান্ড। ৬.৩.১ (কংকিট, বালু ও সিমেন্ট) অনুপাতে ঢালাইয়ের মিশ্রন করার নিয়ম থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। মিশ্রনকৃত ঢালাইয়ের কোন কোন স্থানে অণুবিক্ষন যন্ত্র দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ‘কংকিট’। ফলে কাজ শেষ হতে না হতেই ফেটে যাচ্ছে ঢালাই। এ অবস্থায় চৌকস শ্রমিকেরা “ফাঁটল ধরা সি.সি ঢালাই” ঢেকে দিচ্ছেন “আর.সি.সি ঢালাই” দিয়ে। “সি.সি-আর.সি.সি” ঢালাইয়ের উচ্চতা নিয়েও করা হচ্ছে “নয়-ছয়”। বিশেষ কৌশলে দেয়া হচ্ছে শুভঙ্করের ফাঁকি। ১১ ইঞ্চি উচ্চতার ঢালাই করার কথা থাকলেও দু/একটি স্থান ছাড়া এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । সিডিউল অনুপাতে “সি.সি” ও “আর সি.সি” ঢালাই হবার কথা ছিল যথাক্রমে ৪+৭ ইঞ্চি। কিন্তু বাস্তবতা তার উল্টো। শুধু তাই নয়, নির্মাণ শেষ হয়েছে এমন কিছু স্থান ঘুরে “আর.সি.সি” ঢালাইয়ে রডের চিহ্নও দেখা যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইট,বালু,রড, সিমেন্টসহ সকল সামগ্রিই নিন্মমানের। ফলে নির্মাণ শেষ হবার ৬ মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে যেতে পারে সড়কটি। তাদের অভিযোগ, গাইডওয়ালের উচ্চতাও সিডিউল অনুপাতে হয়নি। এখানেও উচ্চতা বাড়াতে অবলম্বন করা হয়েছে বিশেষ কৌশল। শুধু তাই নয়, জনসাধারণের অবগতির জন্য প্রকল্প এলাকায় স্থাপন করা হয়নি “সিডিউল বোর্ড”। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদারের ঘনিষ্টজন পরিচয়ধারী উজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, সাইনবোর্ড লেখার কাজ চলছে। আজ-কালই তা লাগানো হবে। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোঃ আব্দাল মিয়া বলেন, “অনিয়মের কথা শুনেছি। আমি নিজে গিয়ে দেখে যা করণীয় আছে তাই করব”। এ বিষয়ে প্রকল্পের সাব-ঠিকাদার জিল্লুর রহমানের সাথে বার বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন কথাই বলতে রাজি হননি। এমনকি তিনি তার প্রকল্পের নামটিও জানেন না বলে জানান।
তবে বাহুবল উপজেলা প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভূইয়া জানান ভিন্ন কথা। তার দাবী প্রকল্পের কাজ খুব ভাল ভাবেই চলছে।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা তালুকদার বলেন, “আমি প্রকল্পটি দুইবার পরিদর্শন করে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পেয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে দরখাস্ত পেয়েছি, ব্যবস্থা গ্রহণ করব”।